দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১৭৬, নিখোঁজ ৩

প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়েতে যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা গেছে মাত্র দু’জনকে। এছাড়া এখনো নিখোঁজ রয়েছে তিনজন।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের দেওয়ালের সাথে সংঘর্ষ হয় বিমানটির। এসময় বিমানটিতে মোট ১৭৫ জন যাত্রী ও ছয় জন ক্রু ছিলেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ বলছে, দেশের অগ্নিনির্বাপক কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে- বোয়িং ৭৩৭ ফ্লাইটটিতে থাকা দুজন ছাড়া বাকি সকলেই নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ এই দুর্ঘটনাটিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান বিপর্যয়গুলোর মধ্যে একটি বলে মনে করা হচ্ছে।
রোববার সকালে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে জেজু এয়ারের ৭সি২২১৬ ফ্লাইটটি ১৭৫ জন যাত্রী এবং ছয়জন ক্রু নিয়ে দেশের দক্ষিণে সিউল থেকে প্রায় ২৮৮ মাইল দূরে মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
দুর্ঘটনার পর দুই জনকে জীবিত পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে সংবাদসংস্থা ইয়োনহাপ। উদ্ধারকৃত ওই দুই ব্যক্তির একজন যাত্রী এবং অন্য এক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট বলে অন্য এক প্রতিবেদনে জানা গেছে।
সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর বলছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে দুজনকে জীবিত টেনে বের করা সম্ভব হয়েছে। তবে দমকল কর্মীরা আরো লোককে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে লড়াই করছিল। বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিমানটি কার্যত বিস্ফোরিত হয়, এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং আগুন ধরে যায়।
দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল ফায়ার এজেন্সি জানিয়েছে, পাখির আঘাতের কারণে বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ারে সমস্যা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে এবং ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, অবতরণের সময় মাটিতে চাকা না থাকায় বিমানটি রানওয়েতে পিছলে যাচ্ছিল।
দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটি থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ১৭৩ জন দক্ষিণ কোরিয়ার এবং দুইজন থাই নাগরিককে নিয়ে উড্ডয়ন করেছিল বলেও জানিয়েছে ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যমটি।
এদিকে দুর্ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে টুইন-ইঞ্জিন এই প্লেনটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে একটি দেওয়ালে বিধ্বস্ত হতে দেখা যাচ্ছে। এরপর সঙ্গে সঙ্গেই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।
এরপর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দুর্ঘটনাস্থল থেকে আকাশে বিশাল কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়। দুর্ঘটনার পর ছড়িয়ে পড়া এসব ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, প্লেনের কিছু অংশে আগুন লেগেছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে ‘বেলি ল্যান্ডিং’ (বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার সম্পূর্ণভাবে প্রসারিত না করে) অবতরণ করার চেষ্টা করেছে। বিমানটিতে ছয়জন ক্রু সদস্যসহ ১৮১ জন আরোহী ছিলেন।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মোক সর্বাত্মক উদ্ধার প্রচেষ্টার নির্দেশ দিয়েছেন। তার চিফ অব স্টাফও এই ঘটনা নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। পাখির সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।